গর্ভাবস্থায় জাম খাওয়ার ১৫টি কার্যকারী উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় জাম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আপনি কি জানেন না? আজকের পোষ্টের মাধ্যমে আপনি সম্পূর্ণ বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন। জাম খুব সুস্বাদু ও পুষ্টিকর ফল। জাম, জামের বিচি, জামের পাতা ও জামের ছালে ওষুধে গুনাগুন আছে। জাম খাওয়া শরীরের জন্য খুবই উপকারী। বিভিন্ন ধরনের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাতেও ড্রাম ব্যবহার করা হয়।
চলুন আর দেরি না করে জেনে নেই গর্ভাবস্থায় জাম খাওয়ার কার্যকারী উপকারিতা, গর্ব অবস্থায় জাম খাওয়া যাবে কিনা, গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন কি পরিমান জাম খাওয়া উচিত, জামের প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ ইত্যাদি।
পেজ সূচিপত্র : গর্ভাবস্থায় জাম খাওয়ার উপকারিতা
- গর্ভাবস্থার জাম খাওয়া যাবে কি
- গর্ভাবস্থায় জাম খাওয়ার উপকারিতা
- গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন কি পরিমান জাম খাবেন
- গর্ভাবস্থায় জাম খাওয়ার নিয়ম
- জামের প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ
- গর্ভাবস্থায় জাম খেলে গর্ভের বাচ্চা কালো হয় নাকি ফর্সা হয়
- গর্ভাবস্থায় জাম খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা
- জাম খাওয়ার উপকারিতা
- গর্ভাবস্থায় জাম খাওয়ার অপকারিতা
- শেষ কথা : গর্ভাবস্থায় জাম খাওয়ার কার্যকারী উপকারিতা
গর্ভাবস্থার জাম খাওয়া যাবে কি
গর্ভাবস্থায় জাম খাওয়া যাবে কিনা এ বিষয়ে আমাদের মা বোনদের সংশয়ের শেষ নেই। তাহলে জেনে রাখুন, আপনি গর্ভবতী হলেন নিশ্চিন্তের দাম খেতে পারেন। আবার বিশেষজ্ঞদের মতে গর্ভকালীন সময়ে জাম খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য সম্পূর্ণরূপে নিরাপদ।
কারণ জামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন ও বিভিন্ন ধরনের খনিজ পদার্থ। যা আপনার গর্ভস্থ ভ্রূণের পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটাতে পারে। তাই বুঝতে পারছেন করা অবস্থায় জাম খেলে তাতে উপকার ওই পাবেন আপনিই। সুতরাং গর্ভাবস্থায় রসালো সুস্বাদু ফল খাওয়ার লোভ হলে কারো কথায় কর্ণপাত না করে আপনি নির্দ্বিধায় নিশ্চিন্তে চোখ বন্ধ করে দাম খান।
গর্ভাবস্থায় জাম খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় মা এবং শিশুর সুস্থতার জন্য পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জাম একটি পুষ্টিকর ফল যা গর্ভাবস্থায় খাওয়া উপকারী হতে পারে। এতে থাকা বিভিন্ন ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর গুণাবলী গর্ভাবস্থায় নানা জটিলতা মোকাবিলায় সাহায্য করতে পারে। গর্ভাবস্থায় জাম খাওয়ার উপকারিতা নিচে তুলে ধরা হলো :
১। জামে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, এ এবং বি কমপ্লেক্স আয়রন, ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস রয়েছে যা গর্ভাবস্থায় মা এবং শিশুর জন্য অত্যন্ত উপকারী। ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং আয়রন রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে সহায়তা করে।
২৷ গর্ভাবস্থায় হজমজনিত সমস্যা একটি সাধারণ ব্যাপার। জামে থাকা ফাইবার হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে। ফাইবার খাদ্য হজমে সহায়ক এবং অন্ত্রের গতি সঠিক রাখে যা গর্ভাবস্থায় মায়ের জন্য আরামদায়ক হতে পারে।
৩। গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপ এটি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য সমস্যা। জাম খাওয়ার ফলে শরীরের রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়। এতে রয়েছে পটাশিয়াম যার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের সাহায্য করে। নিয়মিত জাম খাওয়ার ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের রাখতে সাহায্য করে যা প্রাক-প্রসব সংক্রান্ত জটিলতা প্রতিরোধে সহায়তা করতে পারে।
৪। জামে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং প্রদাহরোধী উপাদান মায়ের শরীরকে নানা রোগ থেকে রক্ষা করেন। গর্ভাবস্থায় শরীরে বিভিন্ন প্রদাহ জনিত সমস্যা হতে পারে যা জামে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট গুলো নিরাময়ের সহায়তা করে।
৫। গর্ভাবস্থায় অনেকে ডায়াবেটিকস হওয়ার ঝুঁকি থাকে। জাম খেলে রক্তের শর্করা মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। জাম এবং জামবীজে থাকা উপাদান গুলো রক্তের শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে এবং গর্ভকালীন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে।
৬। আয়রনের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। জাম আয়রনের একটি ভালো উৎস যা রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে সহায়ক। জাম এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যা মা ও শিশুর কোষকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে এবং ইমিউনিটি বৃদ্ধি করে।
৭। হাড় ও দাঁতের গঠনে ক্যালসিয়াম গুরুত্বপূর্ণ। জাম ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস যা শিশুর হাড়ের গঠনেও সাহায্য করে। গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হয়। জাম ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি হজমে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
৮। গর্ভকালীন সময়ে আপনি নিয়মিত জাম খেলে এটি আপনার মুখে স্বাস্থ্য ঠিক রাখবে। ফলের দাঁত ও নারীর কোন সমস্যা খুব সহজে আপনাকে আক্রান্ত করতে পারবে না।
৯। গর্ভাবস্থায় অনেকের রুচিহীনতায় ভোগেন বা খাবার খেতে রুচি পান না। জামে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি। তাই জাম খেলে এটি মুখে পর্যাপ্ত পরিমাণে রুচিয়ে এনে দেয়।
১০। জাম ৭০-৮০% পানি দিয়ে গঠিত যা শরীরের পানি শূন্যতা প্রতিরোধের সাহায্য করে। গর্ভকালীন সময়ে শারীরিক দুর্বলতা একটি নিত্য নৈমিতিক ব্যাপার। জামে রয়েছে প্রাকৃতিক শর্করা। ফলে গর্ভাবস্থায় জাম ভক্ষণে এটি আপনার শারীরিক ক্লান্তি খুব সহজেই দূর করতে পারে।
১১। জাম রক্তের শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে যা গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। জাম হার্টের কার্যক্রম সুস্থ রাখতে সাহায্য করে যা মা ও শিশুর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
১২। গর্ভাবস্থায় অনেকের এলার্জি হয়। আর এই এলার্জি প্রতিরোধ করার জন্য জামে একটি মাধ্যম হতে পারে। এর সাথেও ত্বকের সমস্যা কমাতে জাম সহায়তা করে থাকে।
১৩। জামে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন এ। ভিটামিন এ এর অভাবে দৃষ্টিশক্তির জনিত নানা রকম সমস্যা দেখা দেয়। তাই আপনি যদি কথা অবস্থায় জাম খান তাহলে এটি আপনার গর্ভস্থ শিশুর দৃষ্টি শক্তির বিকাশেও সাহায্য করবে।
১৪। জামে অনেক কম ক্যালরি রয়েছে। আরে কোন ক্যালরির কারণে এটি ওজন নিয়ন্ত্রণের সহায়ক।
১৫। গর্ভাবস্থায় অনেকের হরমোনজনিত সমস্যা হতে পারে। জাম প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।
সর্বোপরি গর্ভাবস্থায় যা আমি একটি স্বাস্থ্যকর ফল হিসেবে বিবেচিত, যা মা ও শিশুর সুস্বাস্থ্যের জন্য বিভিন্নভাবে উপকারী হতে পারে।
গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন কি পরিমান জাম খাবেন
গর্ভাবস্থায় জাম খেয়ে এর উপকারিতা পেতে আপনাকে পরিমাণ মতো পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে। কারণ গর্ভাবস্থায় অসুস্থতা না হলেও খাবারের দিকে বিশেষ নজর দিতে হয়। আবার অনেক সময় ইচ্ছে করলেও আপনার পছন্দের খাবারগুলো খেতে পারবেন না এবং যে কোন খাবার খাওয়ার আগে ভাবতে হয় এটি খাওয়া আপনার জন্য নিরাপদ কিনা।
যদিও জাম একটি রসালো সুস্বাদু ফল, তা বলে আপনি গর্ভকালীন সময়ে এটি আপনার ইচ্ছামত যত খুশি তত খেতে পারবেন না। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, ভিটামিন সি, আয়রন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে।তাই আপনি সাধারণত প্রতিদিন ৫০-১০০ গ্রাম জাম খেতে পারেন। এটি এক মুঠো বা প্রায় ৮-১০টি দাম হতে পারে।
গর্ভাবস্থায় আপনার এমন খাবার খাওয়া প্রয়োজন যা আপনার গর্ভের ছোট্ট সোনামণিকে পুষ্টি জোগাবে এবং আপনি যদি ডায়েটের মধ্যেও থাকেন তাহলে গর্ভাবস্থায় আপনার ডায়েটে যোগ করে নিতে পারেন এই জাম ফল। এ ক্ষেত্রে আপনার ডায়েটের খাদ্য তালিকায় যান যুক্ত করার আগে আপনি একজন জ্ঞানী বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করে নিতে পারেন।
গর্ভাবস্থায় জাম খাওয়ার নিয়ম
উপরে আমরা গর্ভাবস্থায় জাম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা গর্ভাবস্থায় জাম কিভাবে খাব এর নিয়ম সম্পর্কে জানব। এখানে কিছু নিয়ম দেওয়া হল :
- পরিমিত পরিমাণে খাওয়া: জাম খাওয়া পরিমিত পরিমাণে করা উচিত। অতিরিক্ত জাম খেলে পেটের গন্ডগোল হতে পারে কারণ এতে ফাইবারের পরিমাণ বেশি থাকে।
- তাজা ও পরিষ্কার জাম খাওয়া: রাসায়নিক বা কীটনাশক মুক্ত তাজা জাম বেছে নেওয়া উচিত। খাওয়ার আগে ভালোভাবে ধুয়ে নিন।
- এলার্জির সমস্যা না থাকলে: কিছু মায়ের জাম খেলে এলার্জি হতে পারে। যদি আগে থেকে ফলমূলে এলার্জি সমস্যা থাকে, তবে জাম খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
- বীজ এড়িয়ে চলা: জাম খাওয়ার সময় এর বীজ বাদ দিয়ে খাওয়া ভালো, কারণ এতে হজমে সমস্যা হতে পারে।
- ডায়াবেটিস থাকলে সতর্কতা: জাম স্বাদে মিষ্টি, তাই গর্ভকালীন এটি পরিমিত মাত্রায় খাওয়া উচিত।
- ডাক্তারের পরামর্শ : বিশেষ কোনো স্বাস্থ্যগত সমস্যা থাকলে, বিশেষত ডায়াবেটিস চাপের সমস্যা থাকলে জাম খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
সঠিকভাবে মেনে চললে, জামগড় অবস্থায় মায়ের জন্য উপকারী হতে পারে এবং কর্মস্থ শিশুর জন্য পুষ্টি সরবরাহে সহায়ক হয়।
জামের প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ
গর্ভাবস্থায় জাম খাওয়ার নিয়ম জানার পর এবার আপনি নিশ্চয় জামের পুষ্টিগুণ জানতে চান। জাম একটি উচ্চ পুষ্টিকর প্রোফাইল, কোন ক্যালরি এবং ভরপুর সুস্বাদু রসালো ফল। চলুন এই ফলের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জেনে আসি...
প্রতি ১০০ গ্রাম জমে রয়েছে :
আয়রন - ০.২৪ মিলিগ্রাম
ক্যালসিয়াম - ১৯ মিলিগ্রাম
ভিটামিন সি - ১৪ মিলিগ্রাম
ভিটামিন এ - ৯ মাইক্রো গ্রাম
প্রোটিন - ০.৭ গ্রাম
চিনি - ৮.৫ গ্রাম
ডায়েটারি ফাইবার - ০.৬ গ্রাম
কার্বোহাইড্রেট - ১৪ গ্রাম
সোডিয়াম - ২৮ মিলিগ্রাম
ফ্যাট - ০.১ গ্রাম
ক্যালোরি - ৬২ কিলো ক্যালরি
পটাশিয়াম - ৫৫ মিলিগ্রাম
গর্ভাবস্থায় জাম খেলে গর্ভের বাচ্চা কালো হয় নাকি ফর্সা হয়
গর্ভাবস্থায় খাবার খেলে গর্ভের শিশুর গায়ের রং কেমন হবে তা নির্ধারণ হয় না। শিশুর গায়ের রং মূলত জেনেটিক্স বা বংশগতির ওপর নির্ভর করে। মায়ের খাদ্য ভেষ এর সঙ্গে শিশুর ত্বকের রঙ্গের কোন সম্পর্ক নেই। জাম একটি পুষ্টিকর ফল যা ভিটামিন সি, আয়রন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। এটি খেলে গর্ভবতী মা ও শিশুর স্বার্থের জন্য ভালো হতে পারে, তবে শিশুর গায়ের রঙের উপর এর কোন প্রভাব নেই।
সে প্রাচীনকাল থেকে একটা কথা প্রচলিত আছে, গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মা কালো জাম খেলে গর্ভের বাচ্চা কালো হতে পারে। কিন্তু এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ভ্রান্ত একটি ধারণা মাত্র। গবেষণায় দেখা গেছে, চেরি জাতীয় ফল খেলে গর্ভের বাচ্চা মেলানিন নিয়ে জন্মগ্রহণ করে মানে ফর্সা হয়। জাম হলো বেরি জাতীয় ফলের মধ্যে অন্যতম একটি। তাই স্ট্রবেরি, ব্ল্যাকবেরি এমনকি জাম খেলো আপনার ত্বক ভালো থাকবে এবং গর্ভের বাচ্চাও ফর্সা হয়ে জন্মগ্রহণ করা সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে যায়।
গর্ভাবস্থায় জাম খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা
গর্ভাবস্থায় জাম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আমরা যেমন জেনেছি গর্ভাবস্থায় জাম খাওয়ার কিছু সতর্কতা আমাদের জানা উচিত। চলুন জেনে আসি....
- অতিরিক্ত জাম খেলে রক্তের শর্করা পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে যা গর্ভকালীন ডায়বেটিসের ঝুঁকি বাড়াতে পারে তাই দিনে একবার বা দুইবারের বেশি খাওয়া এড়িয়ে চলা ভালো।
- জাম খাওয়ার আগে তা ভালোভাবে ধুয়ে নেওয়া জরুরী। কারণ বাজারের জাম ময়লা ও কীটনাশকযুক্ত হতে পারে। এর ফলে হজমের সমস্যা বা বিষ ক্যারিয়ার ঝুঁকি এড়ানো যায়।
- জাম একটি টক ফল হওয়ায় যদি গর্ভবতী মায়ের অ্যাসিডিটি বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থাকে তাহলে জাম খাওয়া এড়ানো ভালো।
- কিছু মানুষের জাম খাওয়ার পর এলার্জি বা চুলকানির মত সমস্যা অনুভব করতে পারেন। গর্ভাবস্থায় যেহেতু শরীর সংবেদনশীল থাকে, তাই প্রথমবার জাম খেলে সামান্য পরিমাণে খেয়ে দেখতে পারেন কোন প্রতিক্রিয়া হচ্ছে কিনা।
- জাম ফাইবার সমৃদ্ধ হলেও এটি অতিরিক্ত খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা হতে পারে। তবে অল্প পরিমাণে খেলে এটি হজমে সাহায্য করতে পারে।
জাম খাওয়ার উপকারিতা
আমরা গর্ভাবস্থায় জাম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনেছি কিন্তু সবার জন্য জাম খাওয়া কি কি উপকারে আসে তা জানি না। চলুন আপনাদের সবাইকে জানাই দেই জাম খাওয়ার উপকারিতা গুলো কি কি :
১। জাম ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী কারণ এটি রক্তের শর্কারার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের সহায়ক। জাম্বোলিন নামক একটি উপাদান রয়েছে, যা ইনসুলিন এর মত কাজ করে এবং শর্করা কমাতে সহায়তা করে।
২। জাম অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইবার সমৃদ্ধ যা হজম শক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে। এটি কষ্টকাঠিন্য এবং গ্যাসের সমস্যা কমাতে সহায়ক।
৩। জাম শরীর থেকে টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে এবং রক্ত পরিষ্কার রাখে। ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে এবং পূরণের সমস্যা কমে।
৪। জাম অ্যানিমিয়া এবং জন্ডিসকে নিরাময় করে, আর জামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। তাই যাদের শরীরে আয়রনের প্রয়োজন তারা জাম খেতে পারেন।
৫। জামে ম্যালিক অ্যাসিড, গ্যালিক অ্যাসিড, অক্সালিক এসিড, ট্যানিনোস এর মত যৌগ আছে যা এন্টি-ম্যালেরিয়াল, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়া, আন্টি-ইনফেকটিভ এবং গ্যাস্ট্রো থেকে রক্ষা করে। তাই জাম খেলে শরীরের বিষাক্ত ইনফেকশন দূর করে। তাই জাম খেলে শরীরের বিষাক্ত ইনফেকশন দূর হয়।
৬। গবেষণায় জানা গেছে জামে আছে কেমো প্রোটেকটিভ বৈশিষ্ট্য। জামের এই নির্যাস বৈশিষ্ট্য শরীরকে নির্যাস ক্যান্সার হওয়া থেকে রক্ষা করে।
গর্ভাবস্থায় জাম খাওয়ার অপকারিতা
যার উপকারিতা রয়েছে তার কিছু অপকারিতাও রয়েছে। আমরা গর্ভাবস্থায় জাম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনেছি এখন আমরা গর্ভাবস্থায় জাম খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে জানব। চলুন শুরু করা যাক...
- এলার্জি: কিছু নারীর জাম বা এর উপাদানের প্রতি এলার্জি থাকতে পারে। এলার্জির লক্ষণ দেখা দিলে তাই এরিয়া চলা উচিত।
- দাঁতের স্বাস্থ্য: জাম খাওয়ার পরে দাঁত পরিষ্কার না করলে দাঁতের দাগ পড়তে পারে এবং সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
- অতিরিক্ত ফাইবার: জাম বেশি পরিমাণে খেলে পেটের সমস্যার কারণ হতে পারে যেমন গ্যাস, ডায়রিয়া বা পেট ব্যথা।
- চিনি: জামের কিছু প্রকারে চিনি বেশি থাকতে পারে, যা গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, বিশেষ করে যদি মধুমেহ (ডায়াবেটিস) থাকে।
- জীবাণু: যদি যা ভালোভাবে ধোঁয়া না হয় বা ফাঙ্গাস/ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত হয় তাহলে এটি গর্ভবতী মহিলার জন্য ঝুঁকির কারণ হতে পারে।
অতএব গর্ভাবস্থায় জাম খাওয়ার আগে অবশ্য একটি স্বাস্থ্যসম্মত ডায়েট অনুসরণ করা উচিত এবং প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
শেষ কথা : গর্ভাবস্থায় জাম খাওয়ার কার্যকারী উপকারিতা
প্রিয় বন্ধুরা, আজ আমরা গর্ভাবস্থায় জাম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছি। আমরা সকলেই জানি জাম একটি মৌসুমী ফল। আর জাম পছন্দ করা না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। জাম খেলে যেমন উপকার পাওয়া যায় তেমনভাবে জামের কিছু অপকারিতাও আছে। যা আমরা উপরে আলোচনা করেছি বিস্তারিতভাবে। আশা করি সব বুঝতে পেরেছেন।
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং এরকম আর্টিকেল যদি আরো পড়তে চান তাহলে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন। আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত এই ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি।
জানার উপায় ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url