চিয়া সিডের উপকারিতা ও অপকারিতা - চিয়া সিডের পুষ্টিগুণ
আপনি কি চিয়া সিডের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান? আপনি কি ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানেন না? তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্যই। নিচে এগুলো বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
নিচে আরো আলোচনা করা হবে : চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম, চিয়া সিডের বাংলা নাম, চিয়া সিডের পুষ্টিগুণ, গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা, গর্ভাবস্থার চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম, চিয়া সিডের দাম কত, সকালে খালি পেটে চিয়া সিড খেলে কি হয় ইত্যাদি।
পেজ সূচিপত্র ঃ চিয়া সিডের উপকারিতা ও অপকারিতা - চিয়া সিডের পুষ্টিগুণ
- চিয়া সিডের উপকারিতা
- চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম
- চিয়া সিড খাওয়ার সময়
- চিয়া সিড এর বাংলা নাম
- চিয়া সিডের পুষ্টিগুণ
- ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম
- গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা
- গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম
- চিয়া সিডের দাম কত
- সকালে খালি পেটে চিয়া সিড খেলে কি হয়
- চিয়া সিড এর অপকারিতা
- শেষ কথা: চিয়া সিডের উপকারিতা ও অপকারিতা - চিয়া সিডের পুষ্টিগুণ
চিয়া সিডের উপকারিতা
চিয়া সিড এক ধরনের প্রাকৃতিক শক্তি সঞ্চারক হিসেবে পরিচিত, যা স্বাস্থ্যগত অনেক উপকারিতা প্রদান করে। প্রাচীন অ্যাজটেক সভ্যতার লোকেরা এই বীজ কে "শক্তির বীজ" হিসেবে গণ্য করতো। বর্তমানে এটি পুষ্টিকর উপাদান হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। চিয়া সিডে উচ্চমানের প্রোটিন, ফাইবার, ওমেগা -৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং বিভিন্ন ধরনের খনিজ উপাদান রয়েছে। নিচে চিয়া সিড এর উপকারিতা আলোচনা করা হলো :
হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে
চিয়া সিডে প্রচুর পরিমাণে ডায়েটারি ফাইবার থাকে, যা হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করতে সহায়ক। এই ফাইবার হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কমাতে সহায়তা করে। ফাইবার পানির সংস্পর্শে এসে ফুলে ওঠে ফলে দীর্ঘ সময় পেট ভরা অনুভব হয় এবং অতিরিক্ত খাবার প্রবণতা কমে।
ওজন কমাতে সাহায্য করে
চিয়া সিডে ক্যালরির পরিমাণ কম হলেও এতে উচ্চমাত্রার ফাইবার এবং প্রোটিন থাকে। প্রোটিন ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে এবং পেশি গঠনে সাহায্য করে, যা ওজন কমানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। চিয়া সিড দেহে পানির শোষণ প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে এবং বেশিক্ষণ পেট ভরার একটা সহায়তা করে যা খাদ্যভ্যাস নিয়ন্ত্রণের সহায়ক।
হার্টের স্বাস্থ্য রক্ষা করে
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড চিয়া সিডের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এটা খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়ায়, ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের সহায়ক হয়। নিয়মিত চিয়া সিড খাওয়া রক্ত প্রবাহ এবং হৃদযন্ত্রের কার্যক্ষমতা উন্নত করতে সহায়তা করে। এটি হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে কার্যকর।
এন্টিঅক্সিডেন্ট এর উৎস
চিয়া সিডে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা শরীরের কোষগুলিকে ক্ষতিকর ফ্রি রেডিক্যাল থেকে রক্ষা করে। এটি ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং বার্ধক্যজনিত সমস্যা প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
হাড়ের গঠনের সহায়ক
চিয়া সিডে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফসফরাস এর মত খনিজ উপাদান রয়েছে, যা দেহের গঠন ও সাহায্য করে। বিশেষ করে ক্যালসিয়াম হাড়ের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এবং যারা দুধ পান করেন না তাদের জন্য এটি ভালো বিকল্প হতে পারে।
ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ায়
আমরা সবাই চাই আমাদের তবে সৌন্দর্য ভালো থাকুক কিন্তু বিভিন্ন কারণে অনেক সময় তাদের সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই তোকে সুন্দর্য বাড়াতে বা ধরে রাখতে চিয়া সিট খাবেন।
চিয়া সিড একটি শক্তিশালী প্রাকৃতিক পুষ্টিকর উপাদান, যা দেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কার্যক্রম উন্নত করতে সাহায্য করে। এটি দৈনিক খাদ্য তালিকা অন্তর্ভুক্ত করলে দীর্ঘ মেয়াদে শারীর সুস্থতা এবং সত্যি বৃদ্ধিতে সহায়ক হতে পারে।
চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম
উপরে আমরা জেনেছি চিয়া সিডের উপকারিতা সম্পর্কে। এখন আমরা জানবো চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম। নিচের চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
- পানির সাথে মিশিয়ে খাওয়া: চিয়া সিড পানির সাথে মিশিয়ে খেলে সহজে হজম হয় এবং ত্বকের জন্য ভালো। ১ টেবিল চামচ চিয়া সিড ১ কাপ পানির মধ্যে মিশিয়ে ১৫-২০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। তারপর এটি খেতে পারেন।
- স্মুদি বা জুসে মিশিয়ে খাওয়া: সকালে নাস্তায় স্মুদি বা ফলের জুসের সাথে ১-২ চা চামচ চিয়া সিড মিশিয়ে খেলে আপনার দিন শুরু হবে স্বাস্থ্যকর উপায়ে।
- সালাদ বা দই এর সাথে: চিয়া সিডের সালাত বা দইয়ের উপর ছিটিয়ে খাওয়া যেতে পারে। এটি খাবারে অতিরিক্ত টেক্সচার যোগ করে এবং পুষ্টি বাড়ায়।
- স্যুপ বা স্যুপ বেসড খাবারে মিশিয়ে:সকালে খালি পেটে ১চা চামচ চিয়া সিড এক গ্লাস গরম পানির সাথে মিশিয়ে খাওয়া যায়। এটি শরীর থেকে সব টক্সিন বের করতে সাহায্য করে।
- পরিমাণ এবং সতর্কতা: প্রতিদিন ১-২ চা চামচ চিয়া সিড খাওয়া নিরাপদ এবং যথেষ্ট। চিয়া সিড বেশি খেলে পেট ফাঁপার সমস্যা হতে পারে, তাই অতিরিক্ত না খাওয়াই ভালো।
চিয়া সিড খাওয়ার এই নিয়মগুলো অনুসরণ করলে এটি সহজে হজম হয় এবং শরীরের জন্য উপকারী হয়।
চিয়া সিড খাওয়ার সময়
চিয়া সিড খাওয়ার উপযুক্ত সময় নির্ভর করে ব্যক্তির প্রয়োজন ও পছন্দের ওপর। তবে কিছু সময় চিয়া সিড খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য বিশেষভাবে উপকারী হতে পারে। যা জানলে আপনারও উপকার হবে। সকালে খালি পেটে চিয়া সিড খেলে তার শরীরের বিপাকক্রিয়া বাড়ায় এবং দীর্ঘক্ষণ এবং পেট ভরা থাকে, ফলে অপ্রয়োজনীয় খাবার খাওয়ার ইচ্ছে কমে। এটি ওজন নিয়ন্ত্রণে ও সহায়ক হতে পারে। অন্যদিকে দুপুরে বা বিকেলের দিকে স্ন্যাকস হিসেবে চিয়া সিট খেলে তা শক্তি বাড়ায় এবং ক্লান্তি দূর করতে সহায়ক হয়। রাতের খাবারের আগে চিয়া সিড খেলে হজমের সহায়ক এবং এটি রাতে শরীরকে ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করে। তবে যেকোনো সময় চিয়া সিড খাওয়ার আগে সেগুলো কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখলে শরীর সহজে সেগুলো থেকে পুষ্টি গ্রহণ করতে পারে।
চিয়া সিড এর বাংলা নাম
চিয়া সিডের বাংলা নাম হল চিয়া বীজ। এটা ছোট কালো বা ধূসর রং এর বীজ যা মূলত সালভিয়া হিম্পাটিকা গাছ থেকে পাওয়া যায়। অনেকে মনে করেন চিয়া সিডের বাংলা নাম তোকমা দানা আসলে এটা ঠিক নয় চিয়া বীজ তোকমা দানার মধ্যে কিছুটা মিল থাকলেও দুইটা দুই জিনিস।
চিয়া সিডের পুষ্টিগুণ
পুষ্টিবিদরা চিয়া সিডকে সুপার ফুড বলে থাকেন। কারণ এর মধ্যে রয়েছে অনেক বেশি পুষ্টিগুণ যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি উপকারী। কিন্তু অনেকেই জানিনা যে এর মধ্যে কত রকমের পুষ্টিগুণ রয়েছে আর সেই কারণে হয়তো আমরা এগুলো এখনো খাইনা বা পুষ্টি তালিকায় যোগ করি না। তাই আপনাদের সুবিধার্থে চিয়া সিডের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে নিজে আলোচনা করা হলো :
- প্রোটিন: চিয়া সিডে প্রায় ১৫-২০% প্রোটিন থাকে, যার শরীরে পেশি গঠন এবং উন্নয়নে সাহায্য করে। এটি উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের ভালো উৎস হওয়ায় নিরামিষ ভোজীদের জন্য এটি খুবই উপকারী।
- ফাইবার: চিয়া সিড ফাইবার সমৃদ্ধ, যা হজম শক্তি উন্নত করতে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়ক। প্রতি ২ টেবিল চামচ দিয়ে সিডে প্রায় ১০-১২ গ্রাম ফাইবার থাকে।
- ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড: এটি ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উৎস, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে এবং ব্রেন ফাংশন উন্নত করতে সাহায্য করে।
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট: চিয়া সিডে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা শরীরের কোষকে মুক্ত মৌল থেকে রক্ষা করে এবং বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে ভিড় করতে সহায়তা করে।
- ক্যালসিয়াম: চিয়া সিডে ক্যালসিয়াম রয়েছে যা হাড় এবং দাঁতের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এক টেবিল চামচ চিয়া সিডে প্রায় ৬৩ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে।
- আয়রন: চিয়া সিড আয়রন এর ভালো উৎস। এটি রক্তের লোহিত কণিকা তৈরিতে সহায়ক যা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে অক্সিজেন পরিবহনে সাহায্য করে।
ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম
ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়া একটি জনপ্রিয় পদ্ধতি। চিয়া সিডে ফাইবার, প্রোটিন এবং ওমেগা -৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ যা পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে। এটি খাওয়া হলে শরীরে হজম ধীর গতিতে হয় এবং ক্ষুধা অনুভূত হয় ফলে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়।
চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম সহজ । আপনি যদি ওজন কমাতে চিয়া সিড খেতে চান তাহলে সাধারণত প্রতিদিন ১-২ টেবিল চামচ চিয়া সিড খেতে পারেন। তবে খাওয়ার আগে চিয়া সিড পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে যেনো এটি ফুলে ওঠে এবং হজমে সাহায্য করে। এক গ্লাস পানিতে এক টেবিল চামচ চিয়া সিড মিশিয়ে ১৫-২০ মিনিট ভিজিয়ে রাখতে পারেন। এরপর এটি পান করতে পারেন বা স্মুদি, দই বা সালাদে মিশিয়ে খেতে পারেন।
খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে এর স্বাদ আরো ভালো হয়। চিয়া সিডের সঙ্গে লেবুর রস বা মধু মিশিয়ে একটি ডিটক্স তৈরি করে খেতে পারেন। নিয়মিত সঠিক পরিমাণে চিয়া সিড খাওয়া, পর্যাপ্ত পানি পান করা এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যভ্যাস বজায় রাখলে ওজন কমানোর প্রক্রিয়া সহজ হয়।
গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা
আমাদের মনে অনেকেরই প্রশ্ন থাকে যে গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড খাওয়া যাবে কিনা? হ্যাঁ খাওয়া যাবে। গর্ভাঅবস্থায় চিয়া সিড খাওয়া মা ও শিশু স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকার বয়ে আনে। চিয়া সিডে থাকা প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান যেমন ফাইবার, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গর্ভাবস্থার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ওমেগা -৩ ফ্যাটি অ্যাসিড শিশুর মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশের সহায়তা করে।
গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মা-বোনদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দেয়, চিয়া সিডে প্রচুর ফাইবার রয়েছে এটি কষ্টকাঠিন্য সমস্যা কমাতে সাহায্য করে যা গর্ভাবস্থায় মা বোনদের জন্য খুবই উপকারী। প্রোটিন গর্বের শিশুর কোষের গঠন ও বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এবং চিয়া সিডে থাকা প্রোটিন এ প্রয়োজন পূরণে সাহায্য করে। ক্যালসিয়াম শিশুর হাড় এবং দাঁতের বিকাশের জন্য অপরিহার্য, যা চিয়া সিড থেকে পাওয়া যায়।
এছাড়া, চিয়া সিডের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মায়ের শরীরে ফ্রি রেডিক্যাল থেকে সৃষ্টি ক্ষতির প্রতিরোধে সহায়ক। তবে গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত, কারণ অতিরিক্ত ফাইবার গ্রহণ পেটের সমস্যার কারণে হতে পারে।
গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম
উপরে আমরা গর্ভাবস্থায়ী চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমাদের জেনে রাখা ভালো যে গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম গুলো সম্পর্কে। চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক...
- পরিমাণ সীমাবদ্ধ রাখুন: প্রতিদিন ১-২ টেবিল চামচ (প্রায় ১৫-২০ গ্রাম) চিয়া সিড খাওয়া নিরাপদ। অতিরিক্ত খাওয়ার এড়ানো উচিত, কারণ বেশি ফাইবারের কারণে হজম সমস্যা হতে পারে।
- ভিজিয়ে নিন: চিয়া সিড খাওয়া আগে কিছুক্ষণের জন্য পানিতে ভিজিয়ে রাখলে এটি ফুলে যায় এবং সহজে হজম হয়। তাই আপনি চিয়া সিড খাওয়ার আগে ভিজিয়ে নিবেন। এটি কনস্টিপেশনের ঝুঁকি কমায় যা গর্ভাবস্থায় সাধারণ সমস্যা।
- দুধ বা জুসের সাথে মেশান: চিয়া সিড দুধ, বা ওটমিলের সাথে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। এতে পুষ্টির মাত্রা বাড়ে এবং সহজে গ্রহণযোগ্য হয়।
- ধীরে শুরু করুন: যদি আগে কখনো চিয়া সিড না খেয়ে থাকেন, তবে গর্ভাবস্থায় ধীরে ধীরে অল্প পরিমাণে খাওয়া শুরু করুন এবং শরীরের প্রতিক্রিয়া দেখুন।
চিয়া সিডের দাম কত
বর্তমানে দ্রব্যমূলের ঊর্ধ্বগতির সময় প্রায় সব কিছুরই দাম বেশি তেমনি চিয়া সিড এর দাম কিছুটা বেশি। চিয়া সিডের বর্তমান দাম ১০০ গ্রাম ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, ২৫০ গ্রাম ৪০০ থেকে ৫৫০ টাকা, ৫০০ গ্রাম ৮০০ থেকে ১২০০ টাকার মধ্যে এবং এক কেজি কে আছিস এর দাম ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকা।
বাজার অনেক সময় কম বেশি হয়ে থাকে তাই কিছুটা কম বেশি হতে পারে। এছাড়াও অনলাইনে কিছুটা কমেও পেতে পারেন তবে সবসময় বিশ্বস্ত জায়গা থেকে নেওয়ার চেষ্টা করবেন এবং সব সময় ভালো মানের যাচাই-বাছাই করে নিবেন।
সকালে খালি পেটে চিয়া সিড খেলে কি হয়
চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আমরা উপরে জানতে পেরেছি। কিন্তু সকালে খালি পেটে চিয়া সিড খেলে কি হয় তা আমাদের অনেকেরই অজানা। সকালে খালি পেটে চিয়া সিট খাওয়ার বেশ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। আপনি যদি ওজন কমাতে চান তাহলে সকালে খালি পেটে চিয়া সিড খেতে পারেন। কারণ চিয়া সিড খালি পেটে খেলে এটি শরীরের বিপাক ক্রিয়াকে বাড়িয়ে তোলে, যা ওজন কমানোর প্রক্রিয়াকে তুরান্বিত করে। এতে থাকা ফাইবার হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে এবং দীর্ঘক্ষণ পেট ভর্তি রাখে, ফলে অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে। এছাড়াও আপনি যদি ত্বক ভালো রাখতে চান তাহলে সকালে খালি পেটে চিয়া সিড খাওয়া ভালো। কারণ চিয়া সিডে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা শরীরে শক্তি যোগায় এবং ত্বকের জন্য ভালো।
চিয়া সিড এর অপকারিতা
যার উপকারিতা রয়েছে তার কিছু অপকারিতাও রয়েছে। উপরে আমরা জেনেছি চিয়া সিডের উপকারিতা সম্পর্কে জেনেছি এখন আমরা চিয়া সিডের অপকারিতা গুলো সম্পর্কে জানব। চিয়া সিডের অপকারিতা সাধারণত স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর না হলেও, কিছু ক্ষেত্রে এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে, যা সচেতনতা গ্রহণ করা প্রয়োজন। এটি প্রচুর ফাইবার এবং পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ হওয়ায় অনেকেই এটি খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করেন। তবে চিয়া সিডের কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে বিশেষ করে অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করলে। আপনাদের সুবিধার্থে নিচে চিয়া সিড এর অপকারিতা গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
হজমে সমস্যা
আপনার যদি হজমে সমস্যা থাকে তাহলে চিয়া সিড না খাওয়াই ভালো। কারণ চিয়া সিডে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা পেটের জন্য হলেও অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করিলে গ্যাস, পেট ফাঁপা, ডায়রিয়া এবং পেটের অস্বস্তি তৈরি করতে পারে। বিশেষ করে যারা দৈনন্দিন খাবারে কোন ফাইবার গ্রহণ করেন তাদের হঠাৎ করে চিয়া সিড খেলে হজমে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
রক্তপাতের ঝুঁকি
চিয়া সিড ওমেগা -৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ, যার রক্ত পাতলা করতে সহায়ক। তবে আপনাদের যারা রক্তপাত প্রতিরোধে ঔষধ সেবন করেন বা রক্তপাতের সমস্যা আছে তাদের জন্য বিপদজনক হতে পারে। বেশি ওমেগা -৩ গ্রহণ করলে রক্তপাতের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।
রক্ত চাপের সমস্যা
চিয়া সিড রক্তপাত কমাতে সহায়ক হলেও, যারা এর জন্য ওষুধ সেবন করেন, তাদের ক্ষেত্রে এটি রক্তচাপ অতিরিক্ত কমিয়ে দিতে পারে, যা অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।
এলার্জি প্রতিক্রিয়া
যাদের অ্যালার্জিজনিত সমস্যা রয়েছে তাদের চিয়া সিড না খাওয়াই ভালো। কারণ এটি খেলে সাধারণত ত্বকে র্যাশ, চুলকানি, চোখের পানি শ্বাসকষ্টের মতো প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
চোকা বা গলায় আটকে যাওয়া ঝুকি
শুকনো চিয়া সিড পানিতে ভিজে ফুলে ওঠে, তাই শুকানো চিয়া সিড সরাসরি খেলে গলায় আটকে যেতে পারে, যা স্বাস্থ্যদের ঝুঁকে বাড়ায়।
শেষ কথা: চিয়া সিডের উপকারিতা ও অপকারিতা - চিয়া সিডের পুষ্টিগুণ
চিয়া সিডের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে উপরে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ে থাকেন তাহলে আশা করছি সবকিছু জানতে পেরেছেন। চিয়া সিড এর উপকারিতা অনেক যদি আপনি নিয়ম মত খেতে পারেন।
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। গুরুত্বপূর্ণ এবং এরকম আর্টিকেল যদি আরো পড়তে চান তাহলে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন। আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত এ ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি।
জানার উপায় ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url