ইসবগুলের ভুষির উপকারিতা ও অপকারিতা-ইসুবগুলের পুষ্টিগুণ

ইসবগুলের ভুষির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আপনি কি জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্যই। কেউ কখনো কোনদিন কষ্টকাঠিন্য ভোগে থাকেন নি এরকম ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া বিরল। এই সমস্যাগুলোর সমাধান পেতে আজকের আর্টিকেলটি পুরোটি পড়তে থাকুন। 
ইসবগুলের-ভুষির-উপকারিতা-ও-অপকারিতা

নিচে আরো আলোচনা করা হবে : ইসবগুলের ভুষি কি, ইসুবগুলের পুষ্টিগুণ, ইসুবগুলের ভুষি খাওয়ার সঠিক নিয়ম, খালি পেটে ইসুবগুলের ভুষি খেলে কি হয়, গর্ভাবস্থায়ী সব ভুলে ভুসি খাওয়ার নিয়ম, কোষ্ঠকাঠিন্য ইসবগুল খাওয়ার নিয়ম ইত্যাদি। 

পেজ সূচিপত্র ঃ ইসবগুলের ভুষির উপকারিতা ও অপকারিতা- ইসুবগুলের পুষ্টিগুণ

ইসবগুলের ভুষি কি 

আমরা কম বেশি সবাই ইসবগুলের ভুষি চিনি এবং খেয়ে থাকে। ভুসি এক প্রকার দ্রবনীয় ফাইবার যা সাইলিয়াম বীজের খোসা। রেচক বা ল্যাক্সেটিভ হিসেবে পরিচিত।  ইসবগুলের ভুষি হল ইসবগুল গাছের বীজ থেকে তৈরি এক ধরনের ভুসি বা আঁশ। এটি মূলত এক ধরনের প্রাকৃতিক আঁশ হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যা হজম প্রক্রিয়া ভালো রাখার জন্য এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য বেশ উপকারী। ইসুবগুলের ভুষির প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এটি প্রাণীর শোষণ করে ফুলে ওঠে এবং জেলির মতো আকার ধারণ করে। এর ফলে এটি অন্ত্রে সহজে মল তৈরিতে সহায়তা করে এবং মহান নরম রাখতে সাহায্য করে। ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা উভয় রয়েছে। তবে উপকারিতায় বেশি রয়েছে। আমাদের ইসুবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম মেনে খাওয়া উচিত। 

ইসবগুলের গুষ্টিগুণ 

ইসুবগুলের ভুষি আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারী। ইসুবগুলে রয়েছে অনেকগুলো পুষ্টি উপাদান। রয়েছে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান যা আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এক টেবিল চামচ ইসবগুলের ভুষিতে থাকে - ০ শতাংশ ফ্যাট, ১৫ মিলিগ্রাম সোডিয়াম, ১৫ গ্রাম শর্করা, ৫৩ শতাংশ ক্যালরি, ৩০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ০.৯ গ্রাম আয়রন। 
ইসবগুলের-গুষ্টিগুণ

ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার উপকারিতা 

ইসবগুলের ভুষি হল একপ্রকার প্রাকৃতিক আঠালো উপাদান যা এসব গুলের বীজ থেকেও প্রস্তুত করা হয়। এটি খাবারের ফাইবারের চমৎকার একটি উৎস হিসেবে পরিচিত, যা আমাদের দেহের বিভিন্ন উপকারে আসে। নিচে ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা বর্ণনা করা হলো :
হজমশক্তি বৃদ্ধি: 
ইসুবগুলের ভুষি হজম প্রক্রিয়ায় সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এটি পানি শোষণ করে অন্ত্রে মলকে নরম করে এবং বৃহদান্ত্রে চাপ কমায়। এর ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় এবং সহজে মলত্যাগ করতে সহায়তা করে। ইসুবগুলের ভুষি ডায়রিয়া নিরাময় কার্যকর, কারণ এটি অতিরিক্ত পানি শোষণ করে মলকে ঘন করে। 
রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণের সহায়ক:
ইসবগুলের ভুসিতে দ্রবণীয় ফাইবার রয়েছে, যা রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এটি অন্ত্রের শর্করার শোষণ ধীর করে, যার ফলে খাবারের শক্ত রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি কমে। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি বিশেষ উপকারী, কারণ নিয়মিত ইসুবগুলের ভুসি খেলে রক্তের শর্করার মাথা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। 
রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে সহায়ক:
ইসুবগুলের ভুষি রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখে। এটি অন্ত্রে ফ্যাট এবং কোলেস্টেরল শোষণ করতে সহায়তা করে, যার ফলে রক্তে ক্ষতিকারক কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে। উচ্চ কোলেস্টেরল রোগীদের জন্য এটি একটি প্রাকৃতিক ও কার্যকর সমাধান হতে পারে। 
হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়:
ইসবগুলের ভুষি নিয়মিত গ্রহণ করলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং হৃদপিন্ডের উপর চাপ কমে। এর ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে এবং হৃদযন্ত্র সুস্থ থাকে। এর ফাইবার উপাদান রক্তনালিকে সুস্থ রাখে এবং ব্লকেজ হওয়ার ঝুঁকি রাস করে। 
ত্বকের পরিচর্যা:
ইসুবগুলের ভুষি খাওয়ার পাশাপাশি এটি ত্বকের যত্ন ব্যবহৃত হয়। এটি একটি প্রাকৃতিক এক্সফোলিয়েন্ট  হিসাবে কাজ করে, যা ত্বক থেকে মৃত কোষ  সরিয়ে ত্বককে উজ্জল ও কমল করে। এছাড়া, এটি শরীর থেকে টক্সিন বের করতে সহায়ক ধাতুকার স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
ডায়রিয়া প্রতিরোধ করে:
ইসবগুলের ভুষি ডায়রিয়ার প্রতিরোধে বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখে। এটি দইয়ের সাথে মিশিয়ে খেলে ডায়রিয়া থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। দইয়ে থাকে প্রোবায়োটিক যা পাকস্থলের বিভিন্ন ইনফেকশন ছাড়াতে বেশ কার্যকরী। আর ইসুবগুলের ভুষিতে থাকে যে উপাদান তার তরল মলকে শক্ত করতেও সাহায্য করে।  ফলে ডায়রিয়া দ্রুত সরে ওঠে। 
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করে: 
কমবেশি প্রায় সকলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগে থাকি আমরা। এই সমস্যা মূলত আমাদের নিজেদের এই সৃষ্টি। কারণ ভুলভাল গড়ে তোলার কারণে এই সমস্যাটি দেখা দেয় আমাদের। যার ফলে আমরা সমাধান পেতে বিভিন্ন ওষুধপত্র খেয়ে থাকি। কিন্তু আমরা চাইলেই ঘরোয়া উপায়ে এই সমস্যা সমাধান করতে পারি। 

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে ইসুবগুলের ভুষি বেশ কার্যকর। এটি পাকস্থলীর ভেতর দেয়াল পা প্রতিরক্ষা মূলক স্তর তৈরি করে যার কারনে এসিডিটি থেকে পাকস্থলিকা রক্ষা করে। নিয়মিত এটি খাওয়ার ফলে হজম ঠিক রাখে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেও সহায়তা করে। তাই আমাদের উচিত নিয়মিত এইসবগুলের ভুষি খাওয়া। 

সর্তকতা:
ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার সময় পর্যাপ্ত পানি পান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি প্রাণীর শোষণ করে ফুলে ওঠে এবং পর্যাপ্ত পানি না পেলে অন্ত্রে বাধার সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়া গর্ভবতী নারীদের এবং কোন বিশেষ রোগ সম্পূর্ণ ব্যক্তিদের ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ইসুবগুলের ভুষি খাওয়া উচিত নয়। 

সর্বশেষ, ইসুবগুলের ভুষি একটা প্রাকৃতিক উপাদান, যা হজম শক্তি বৃদ্ধিতে, রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে, ওজন কমাতে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক। তবে এটি সঠিক নিয়মে ও পরিমাণে গ্রহণ করা উচিত, যেন সর্বোচ্চ উপকার পাওয়া যায়। 

ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার সঠিক নিয়ম 

যেহেতু ইসুবগুলের ভুষি আমরা বিভিন্ন প্রয়োজনে খেয়ে থাকি তাই এ ভুসি খাওয়ার অবশ্যই সঠিক নিয়ম রয়েছে। আপনাদের সুবিধার্থে নিচে ইসুবগুলের ভুসি খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। চলুন আর দেরি না করে জেনে নিই। 

১। খাওয়ার আগে বা পরে:
সাধারণত, ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার জন্য উপযুক্ত সময় হলো রাতে ঘুমানোর আগে। তবে সকালে খালি পেটে অথবা খাওয়ার আধা ঘন্টা আগে বা পরে ইসুবগুলের ভুসি খাওয়া যেতে পারে। 
২। ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার পরিমাণ:
প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রতিদিন ৫-১০ গ্রাম (১-২টেবিল চামচ) ইসবগুলের ভুষি যথেষ্ট। 
শিশুদের জন্য এটি ১-২ চা চামচ। 
৩। পানির পরিমাণ:
ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার সময় প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে (প্রতি টেবিল চামচ ভুষির জন্য ১-২ গ্লাস পানি)।
ইসবগুলের ভুষি পানি শোষণ করে ফুলে ওঠে, তাই এটি খাওয়ার পর পর্যাপ্ত পানি না খেলে কষ্ট কাঠিন্যের সমস্যা হতে পারে। 
৪। খাওয়ার পদ্ধতি
জল মিশিয়ে : ১-২ টেবিল চামচ ভুসি এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে কিছুক্ষণ রেখে খেয়ে নিতে পারেন। 
দুধ মিশিয়ে: রাতে ঘুমানোর আগে গরম দুধের সাথে ইসুবগুলের ভুষি মিশিয়ে খেলে এটি হজমে সহায়তা করতে পারে। 
মধু ও লেবুর রসে মিশিয়ে: যারা স্বাদ পরিবর্তন চান, তারা মধুবালেব রস দিয়ে ভুসি খেতে পারেন। 

সর্তকতা:
ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার পর থাকতে পানি পান না করলে অস্বস্তি ও বা কষ্ট কাঠিন্য দেখা দিতে পারে। 
দীর্ঘ মেয়াদে নিয়মিতভাবে ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত, বিশেষত যাদের ডায়াবেটিস, কিডনি সমস্যা বা অন্ত্রের সমস্যা রয়েছে। 

সকালে খালি পেটে ইসবগুলের ভুষি খেলে কি হয় 

asdইসবগুলের ভুষি হলো ফাইবার সমৃদ্ধ এক প্রকার প্রাকৃতিক উপাদান, যা স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বহুল ব্যবহৃত। সকালে খালি পেটে ইসবগুলের ভুসি খাওয়া অনেক উপকারে আসতে পারে। এটি মূলত কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়ক এবং হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার অন্যতম প্রধান উপকারিতা হলো এটি অন্ত্রের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে। এতে উচ্চ মাত্রায় দ্রবণীয় ফাইবার থাকায় এটি পেটের ভেতর পানি শোষণ করে একটি জেলি সদৃশ অবস্থার রূপান্তরিত হয়, যা অন্ত্রের মলকে নরম করে এবং সহজে বের হতে সাহায্য করে। এ কারণে এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কার্যকর। 
ওজন কমাতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের জন্য এটি একটি ভালো উপাদান। এটি পেটে ভরাট অনুভূতি দেয়, ফলে খুদা কমে এবং খাবারের পরিমাণ ও নিয়ন্ত্রণ করে। তবে, ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার পর প্রচুর পরিমাণ পানি পান করা প্রয়োজন, না হলে পেট ব্যথা বা সুস্থতার সমস্যা হতে পারে। সবশেষে বলা যায়, ইসবগুলের ভুষি খালি পেটে খাওয়া স্বাস্থ্যকর হতে পারে, তবে দীর্ঘ মেয়াদী ব্যবহারের আগে বা বিশেষ স্বাস্থ্য সমস্যা থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত। 

গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম 

গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুষি খাওয়া সাধারণত নিরাপদ, তবে এটি সঠিক পরিমাণে খাওয়া উচিত। এটি পাচনতন্ত্রের জন্য উপকারী, কারণ এটি ফাইবার সমৃদ্ধ এবং কষ্টকাঠিন্য কমাতে সাহায্য করতে পারে। নিচে গর্ভাবস্থায় ইসুবগুলের ভুষি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:
  • সঠিক পরিমাণে খাওয়া: গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ফাইবার খাওয়া কিছু সমস্যা তৈরি করতে পারে, যেমন পেট ফেপে যাওয়া বা পেটের অস্বস্তি। তাই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী পরিমাণ নির্ধারণ করুন। 
  • অধিক পানি পান করা: ইসুবগুলের ভুষি পানির সঙ্গে মিশিয়ে খেতে হয়, এবং এটি শরীরের পানি শোষণ করে, তাই পর্যাপ্ত পানি পান করা উচিত। গর্ভাবস্থায় শরীরের জলশূন্যতা এড়াতে পর্যাপ্ত পানি গ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ। 
  • পুষ্টির সুষম পরিমাণ: ইসুবগুলের ভুষি একাই ব্যবহার না করে, আপনার পুষ্টির চাহিদা পূরণের জন্য সুষম খাদ্য গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ। 
  • কোন সমস্যা বা অসুবিধা দেখা দিলে: যদি আপনি গর্ভাঅবস্থায় কোন ধরনের অস্বস্তি, পেট ব্যথা, ভারতেরিক্ত গ্যাসের সমস্যা অনুভব করেন, তবে ইসুবগুলের ভুষি খাওয়া বন্ধ করে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। 

কষ্ঠকাঠিন্যে ইসবগুলের খাওয়ার নিয়ম 

আপনি কি কষ্ট কাঠের নিয়ে ইসুবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে নিচের অংশটুকু আপনার জন্যই। এখন আপনাদের সুবিধার্থে আলোচনা করব কষ্টকাঠিন্য দূর করার জন্য ইসুবগুলের ভুষি খাওয়ার নিয়ম। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য ইসুবগুলের ভুসি একটি প্রাকৃতিক এবং কার্যকরী উপাদান। এটি আমাদের পাচনতন্ত্রকে সুস্থ রাখতে সহায়ক এবং কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সাহায্য করে। নিজে কষ্টকাঠিন্যে এসব গোল খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:

পানিসহ খাওয়া: 
  • ১ চা চামচ ইসবগুলের ভুষি এক গ্লাস পানি বা অন্যান্য তরল (যেমন দুধ বা স্যুপ) এর সাথে মিশিয়ে খেতে হবে। 
  • এটি খাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে আরও এক গ্লাস পানি পান করতে হবে, কারণ ইসুবগুলের পানি শোষণ করে এবং এটি ঠিকভাবে কাজ করতে পানি দরকার। 
পানি এবং তরল খাওয়ার পরিমাণ বাড়ানো:
  • ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার সময় পর্যাপ্ত পানি পান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দৈনিক ৮-১০ গ্লাস পানি খাওয়া উচিত, যাতে এটি আপনার পছন্দের সঠিকভাবে কাজ করে। 
সময়সূচী:
  • সকালে উঠে খালি পেটে ইসুবগুলের ভুষি খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি পাচনতন্ত্রকে সচল করে এবং কষ্টকাঠিন্য কমাতে সাহায্য করে। 
  • এটি রাতে খাওয়া যেতে পারে, তবে খাওয়ার পরে প্রচুর পানি পান করা জরুরী। 
প্রতিদিন এর পরিমাণ:
  • সাধারণত দিনে ১-২ চা চামচ ইসবগুলের ভুষি খাওয়া যথেষ্ট। এ তবে এটি আপনার শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী বাড়ানো বা কমানো যেতে পারে। 
  • শিশুদের জন্য পরিমাণ কম রাখতে হয়, সাধারণত ১/২ চা চামচ এবং সব সময় শিশুর জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। 
কষ্ঠকাঠিন্যে-ইসবগুলের-খাওয়ার-নিয়ম 

ইসবগুলের অপকারিতা 

যার উপকারিতা রয়েছে তার কিছু অপকারিতা রয়েছে। উপরে আমরা ইসবগুল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা ইসবগুলের অপকারিতা সম্পর্কে জানবো। যদিও এর অপকারিতা থেকে উপকারিতা বেশি, তবে অতিরিক্ত বা ভুল ভাবে ব্যবহারের ফলে অপকারিতা পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে।নিচে ইসুবগুলের অপকারিতাগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো :
  • পেটের সমস্যা: অতিরিক্ত ইসবগুল খাওয়ার ফলে গ্যাস, পেট ফাঁপা, কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়ার সমস্যা হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে, এটি ডিহাইড্রেশন এর ও কারণ হতে পারে, কারণ এটি শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি শোষণ করে। 
  • এলার্জিক প্রতিক্রিয়া: কিছু মানুষের ইসুবগুলের প্রতি এলার্জি থাকতে পারে, যা ত্বকে র্যাস, শ্বাসকষ্ট বা চোখের জ্বালা সৃষ্টি করতে পারে। এলার্জিক প্রতিক্রিয়ার ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। 
  • অত্যাধিক ব্যবহারের ক্ষতি: দীর্ঘ সময় ধরে অত্যধিক পরিমাণ ইসবগুল খেলে শরীরের প্রাকৃতিক পেটের কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে। এতে কষ্ট কাঠের না আরো বেড়ে যেতে পারে এবং শরীরের পুষ্টির শোষণ প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। 
  • ওষুধের সাথে মিশক্রিয়া: ইসবগুল কখনো কখনো কিছু ওষুধের কার্যকারিতা পরিবর্তন করতে পারে। যেমন হৃদপিন্ডের ঔষধ, ডায়াবেটিসের ঔষধ বা অন্যান্য ল্যাক্সেটিভের সঙ্গে যা শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। 
  • গলা আটকে যাওয়া: ইসবগুল খাওয়ার পর তাও যদি পর্দা পানি না দিয়ে খাওয়া হয়, তবে গলা বা খাবারের নালীতে আটকে যেতে পারে, যা শ্বাসকষ্ট বা চোষণ সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। 

শেষ কথা: ইসবগুলের ভুষির উপকারিতা ও অপকারিতা-ইসুবগুলের পুষ্টিগুণ 

ইসবগুলের ভুষির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে উপরে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনারা সম্পূর্ণভাবে বুঝতে পেরেছেন। দীর্ঘ সময় ধরে ইসবগুলের একটানা খাওয়া উচিত নয়। এতে উপকারের পাশাপাশি অপকারও বেশি হয়। টানা সপ্তাহখানেক ইসুবগুলের ভুষি খাওয়ার পরে যদি কোষ্ঠকাঠিন্যের কোন উন্নতি না হয়ে থাকে তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এছাড়াও অন্য যে কোন সমস্যায় এসব ভুলের ভুসি খেতে চাইলে ডাক্তারের পরামর্শ মেনে খাওয়া উচিত। 
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। গুরুত্বপূর্ণ এবং এরকম আর্টিকেল যদি আরো পড়তে চান তাহলে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন। আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত এ ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

জানার উপায় ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url