শিমুল মূল খাওয়ার ১২টি উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানুন
শিমুল মূল খাওয়ার উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আপনি কি জানতে চান? খালি পেটে শিমুল মূল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানেন কি? যদি না জেনে থাকেন তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্যই।
নিচে আরও আলোচনা করা হবে: শিমুল মূল খাওয়ার নিয়ম, শিমুল মূল রোপনের সময় ও পদ্ধতি গুলো, শিমুল মূল কাঁচা খেলে কি হয়, শিমুল মূলের পুষ্টি উপাদান সমূহ, শিমুল মূলের পাউডার খাওয়ার নিয়ম, শিমুল মূলের পাউডার খাওয়ার উপকারিতা, শিমুল মূলের দাম কেমন ইত্যাদি।
পেজ সূচিপত্র ঃ শিমুল মূল খাওয়ার ১২টি উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম
- শিমুল মূল খাওয়ার উপকারিতা
- শিমুল মূল খাওয়ার নিয়ম
- শিমুল মূল রোপনের সময় ও পদ্ধতি গুলো
- শিমুল মূল কাঁচা খেলে কি হয়
- শিমুল মূলের পুষ্ঠি উপাদান সমূহ
- শিমুল মূলের পাউডার খাওয়ার উপকারিতা
- শিমুল মূলের পাউডার খাওয়ার নিয়ম
- খালি পেটে শিমুল মুল খাওয়ার উপকার
- শিমুল মূল কোথায় পাওয়া যায়
- শিমুল মূলের দাম কেমন
- শিমুল মূল খাওয়ার অপকারিতা
- শেষ কথা : শিমুল মূল খাওয়ার উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম
শিমুল মূল খাওয়ার উপকারিতা
শিমুল মূল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আপনি কি জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন কারণ এখন আপনাকে জানাবো শিমুল মূল খাওয়ার উপকারিতা গুলো সম্পর্কে। তো চলুন আর দেরি না করে আমরা বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়ার চেষ্টা করি শিমুল মূল খাওয়ার উপকারিতা গুলো।
- ত্বকের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে: শিমুল মূলে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও আন্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান, যা ত্বকের ব্রণ, ফুসকুড়ি ও অন্যান্য প্রদাহ কমাতে সহায়ক। এটি ত্বককে মসৃণ ও উজ্জ্বল করে তোলে।
- রক্ত পরিষ্কার করে: শিমুল মূল রক্ত থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করতে সাহায্য করে। নিয়মিত এর ব্যবহার রক্তকে বিশুদ্ধ করে এবং শরীরকে স্বাস্থ্যবান রাখে।
- যৌন স্বাস্থ্য উন্নত করে: প্রাচীন আয়ুর্বেদ শিমুল মুলকে যৌন স্বাস্থ্য উন্নত করার ঔষধ হিসেবে ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়। এটি যৌন শক্তি বাড়ায় এবং শারীরিক শক্তি ও উদ্যম বাড়ায়।
- পেটের সমস্যা দূর করে: শিমুল মূল হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে সহায়ক। এটি কষ্টকাঠিন্য ও বদ হজমের সমস্যা দূর করে এবং পেটের গ্যাস, পেট ফাঁপা প্রভৃতি সমস্যায় উপকারী।
- শক্তি ও সহনশীলতা বাড়ায়: শিমুল মূল নিয়মিত সেবন করলে শারীরিক শক্তি বাড়ে এবং দীর্ঘস্থায়ী শারীরিক সহনশীলতা বৃদ্ধি পায়। এটি ক্লান্তি দূর করতে সহায়ক।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের সাহায্য করে: শিমুল মূলের বিশেষ উপাদান রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী।
- যক্ষা প্রতিরোধে সহায়ক: আয়ুর্বেদ মতে শিমুল মূল যক্ষা রোগ প্রতিরোধে সহায়ক। এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং রক্ষার ঝুঁকি কমায়।
- কিডনির সমস্যা দূর করতে কার্যকর: শিমুল মূল কিডনির কার্যক্ষমতা উন্নত করতে সাহায্য করে। এটি মূত্রবর্ধক হিসেবে কাজ করে এবং কিডনির বিষাক্ত পদার্থ দূর করে।
- রক্তপাত কমাতে সাহায্য করে: শিমুল মূল শরীরে রক্ত ক্ষরণ কমাতে বিশেষ কার্যকরী। এটি শরীরে রক্ত জমাট বাঁধতে সহায়ক উপাদান হিসেবে কাজ করে।
- সর্দি-কাশিত উপকারী: শিমুল মূল ঠান্ডা, সর্দি ও কাশির সমস্যা দূর করতে সহায়ক। এর গুনাগুন গলা ও শ্বাসনালীর সংক্রমণ কমায় এবং কাশির উপশমে কাজ করে।
- বাতের ব্যথা কমায়: শিমুল মূলে থাকা এন্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান বাতের ব্যথা কমাতে সহায়ক। এটি জয়েন্ট ও মাংসপেশীর ব্যথা দূর করতে কার্যকর।
- ওজন কমাতে সাহায্য করে: শিমুল মূল শরীরের জন্য থাকা অতিরিক্ত ফ্যাট কমাতে সহায়ক। এটি বিপাক প্রতিক্রিয়া উন্নত করে যা দ্রুত ওজন কমাতে সহায়তা করে।
শিমুল মূল খাওয়ার নিয়ম
আপনি কি শিমুল মূল খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? আপনাদের জানার সুবিধার্থে শিমুল মূল খাওয়ার কিছু নিয়ম নিচে তুলে ধরছি পড়তে থাকুন।
১। শিমুল মূলের গুঁড়ো: শিমুল মূল শুকিয়ে তা গুড়ো করে খাওয়া সবচেয়ে সাধারণ পদ্ধতি। দৈনিক ১-২ গ্রাম শিমুল মূলের গুঁড়ো একগ্লাস গরম পানিতে মিশিয়ে খেতে পারেন। তবে একে খাওয়ার আগে কোন আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
২। শিমুল মূলের পেস্ট: শিমুল মূলের তাজা টুকরো নিয়ে তা বেটে পেস্ট তৈরি করে ব্যবহার করা যায়। বিশেষ করে কোন ফোড়া বা ত্বকের সমস্যা হলে এই পেস্ট আক্রান্ত স্থানে লাগানো যায়। এটি ত্বকের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
৩। চা বা ক্বাথ হিসেবে: শিমুল মূল এর কিছু টুকরো নিয়ে পানি দিয়ে ভালোভাবে সিদ্ধ করে ক্বাথ তৈরি করা যায়। এটি হালকা গরম অবস্থায় পান করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
৪। দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া: শিমুল মূলের গুঁড়ো একগ্লাস দুধের সঙ্গে মিশিয়ে নিয়মিত পান করতে পারেন। এটি বিশেষ করে পুরুষের যৌন শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক বলে ধারণা করা হয়। তবে এই নিয়মে খাবার খেতে নির্দিষ্ট পরিমাণ বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
বিশেষ রোগ অনুযায়ী:
- শুক্রতারল্য ও যৌন দুর্বলতায় আপনি ৭-১২ গ্রাম শিমুলের পাউডার, সমপরিমাণ চীনের সাথে মিশিয়ে প্রতিদিন এক থেকে দুইবার সেবন করতে পারেন।
- প্রদর ও অতিরিক্ত রক্তস্রাব নিরাময়ে আপনি এক থেকে দুই গ্রাম কষচূর্ণ এবং সমপরিমাণ চিনি দুধের সাথে মিশিয়ে প্রতিদিন এক থেকে দুইবার সেবন করতে পারেন এতে অনেক উপকারিতা পাবেন।
শিমুল মূল রোপনের সময় ও পদ্ধতি গুলো
শিমুল মূল সাধারণত বসন্তকালে ফুল ফোটায় এবং এর মূল গাছের সাথে সম্পর্কিত কিছু নির্দিষ্ট সময় রোপন করা হয়। শিমুল গাছের মূল রোপন করতে গেলে নিম্নোক্ত সময় এবং পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন:
রোপনের সেরা সময়:
শিমুল গাছের মূল রোপণের জন্য বর্ষাকাল(জুন থেকে আগস্ট) সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। এই সময়ে মাটি সিক্ত থাকে, যা শিমুলের মূলে নতুন শিকড় গজাতে সাহায্য করে। তবে শীতকালে বা গ্রিষ্মের শুরুতেও কিছু এলাকায় এটা রোপন করা সম্ভব।
রোপনের পদ্ধতি:
১। মাটি প্রস্তুত করা:
শিমুল গাছ ভালোভাবে বেড়ে উঠতে পারে এমন নাইটি নির্বাচন করা উচিত। বেলে -দোঁয়াশ মাটি এবং পানি নিষ্কাশনের ভালো সুবিধা আছে এমন মাটিতে শিমুল ভালো জন্মায়। মাটি প্রস্তুতির জন্য প্রথমে ২-৩ ফুট গভীর গর্ত খুঁজে নিতে হবে।
২। গর্তের মাপ:
শিমুল গাছের মূল রোপণের জন্য ১-২ ফুট গভীর এবং প্রায় ১-২ ফুট চওড়া গর্ত খুঁড়ে নেওয়া উচিত। মাটিতে পুষ্টি জোগানোর জন্য গর্তে কিছু পরিমাণ জৈব সার যেমন পচা গবর বা কম্পোস্ট মিশিয়ে দিন।
৩। মূল রোপন করা:
গড়তে শিমুল গাছের মূল বসিয়ে তারপর মাটি দিয়ে ঢেকে দিন। গাছটি সোজাভাবে রাখার দিকে খেয়াল রাখুন।
৪। সেচ প্রদান:
প্রবণের পর প্রথমদিকে নিয়মিত সেচ দিন, বিশেষত যদি এটি বর্ষাকালের বাইরের রোপন করা হয়। প্রথম ছয় মাস গাছের মাটি আদ্র রাখার জন্য সপ্তাহে ২-৩ বার পানি দিতে পারেন।
৫। পরিচর্যা:
শিমুল গাছ দ্রুত বাড়তে পারে, ডাই নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার, ছাড় প্রয়োগ এবং মাটি নরম করার জন্য কুপিয়ে রাখা প্রয়োজন। শিমুল গাছ দ্রুত বড় হয় এবং এই গাছ ৪-৫ বছরের মধ্যে পূর্ণবয়স্ক হয়ে ওঠে।
শিমুল মূল কাঁচা খেলে কি হয়
শিমুল মূল আয়ুর্বেদ প্রাচীন চিকিৎসা শাস্ত্রের বিভিন্ন উপকারী গুণের জন্য পরিচিত। এটি মূলত শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ও হাড় শক্ত করতে সহায়ক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কাঁচা শিমুল মুল খেলে অনেক উপকারিতা রয়েছে যেমন - আপনার শুক্রাণু বৃদ্ধি পাবে,আপনার যৌন শক্তি বৃদ্ধি পাবে, রক্ত আমাশয় নিরাময় হবে, ফোরা নিরাময় হবে এবং অতিরিক্ত রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর হবে।
তবে কাঁচা শিমুলের মূল খাওয়া বিপদজনক হতে পারে। শিমুলের মূলে রাসায়নিক উপাদান শরীরের প্রতিকূলতা প্রভাব ফেলতে পারে এবং এটি কিছু বিষাক্ত উপাদান ও বহন করতে পারে যা সরাসরি গ্রহণ করলে শারীরিক সমস্যা তৈরি করতে পারে। কাঁচা শিমুলের মুল খেলে পেটের ব্যথা, বমি ও ডায়রিয়ার মত উপসর্গ দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত কাঁচা শিমুল মূল খেলে ত্বক বা লিভারের সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
সঠিক পদ্ধতিতে শুখিয়ে এবং সঠিক মাত্রায় ব্যবহারের মাধ্যমে শিমুলের মূলের উপকারিতা পাওয়া যায়। ভেষজ চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মত সঠিকভাবে প্রক্রিয়াকরনের পরই এটি ব্যবহার করা উচিত। তাই কাঁচা শিমুলের মূল খাওয়া থেকে বিরত থাকা ভালো, কারণ এটি অপপ্রক্রিয়াজাত অবস্থায় বিষক্রিয়া সৃষ্টিকর্তা পারে।
শিমুল মূলের পুষ্ঠি উপাদান সমূহ
শিমুল মূলের উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম জানার পর এবার নিশ্চয়ই এর পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানতে চান। যারা শিমুল মূলের পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে জানেন না, তাদের সুবিধার্থে নিচে তুলে ধরা হলো।
প্রোটিন: ১.২%
চিনি : ৮.২%
স্টার্চ : ৭১.২%
আদ্রতা : ৭.৫%
চর্বি : ০.৯%
খনিজ পদার্থ : ২.১%
ট্যানিন : ০.৯%
সেলুলোজ : ২%
ক্যালসিয়াম : ৯৩ মিলিগ্রাম /১০০ গ্রাম
শিমুল মূলের পাউডার খাওয়ার উপকারিতা
শিমুল মূলের উপকারিতা সম্পর্কে তো আমরা জেনেছি কিন্তু শিমুল মূলের পাউডার খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে প্রায় অধিকাংশ মানুষ ধারণা রাখে না। চলুন জেনে নেওয়া যাক। শিমুল গাছের মূল থেকে তৈরি পাউডার প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে পরিচিত এবং এর অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। এই পাউডারের রয়েছে এন্টি-অক্সিডেন্ট, অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি এবং রোগ প্রতিরোধ গুনাগুন যা শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
প্রথমত, শিমুল মূলের পাউডার হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এটি অন্তরের স্বাস্থ্য উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কার্যকর। শিমুল মূলের পাউডার পেটে আলসার ও এসিডিটি নিয়ন্ত্রণের সাহায্য করতে পারে, যা হজম প্রক্রিয়াকে স্মুত করে তোলে। দ্বিতীয়ত, এটি শরীরে ত্বকের জন্য উপকারী। শিমুল মূলের পাউডার ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে এবং ব্রণ বা অন্যান্য ত্বকের সমস্যা কমাতে সহায়তা করে।
এছাড়া এটি ত্বকের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ পূর্ণগঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তৃতীয়ত, শিমুল মূলের পাউডার দেহে প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এর এন্টিঅক্সিডেন্ট গুনাগুন শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয় এবং রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। তবে, এটি ব্যবহারের পূর্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত, কারণ অতিরিক্ত সবনে কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে।
শিমুল মূলের পাউডার খাওয়ার নিয়ম
উপরে আমরা শিমুল মূলের পাউডার খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনেছি, এজন্য শিমুল মূলের পাউডার খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আমাদের জানা দরকার। নিচে আপনাদের সুবিধার্থে আলোচনা করা হলো:
- পরিমাণ: সাধারণত, ১-২ চা চামচ (৫-১০গ্রাম) শিমুল মূলের পাউডার দিনে ১-২ বার খাওয়া যেতে পারে। তবে সঠিক পরিমাণ আপনার স্বাস্থ্য অবস্থা অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে।
- মিশ্রণ: শিমুল মূলের পাউডার পানি, দুধ বা খাবারের পরে খাওয়া সবচেয়ে ভালো। এটি স্বাদ বাড়ায় এবং সহজে হজম হয়।
- স্বাস্থ্য সেবক এর পরামর্শ: যদি আপনি কোন স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন, তাহলে শিমুল মূলের পাউডার খাওয়ার আগে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
- সাইড এফেক্ট: শিমুল মূলের পাউডার অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে কিছু মানুষের পেটের সমস্যা বা এলার্জি হতে পারে। প্রথমবার খাওয়ার আগে ছোট পরিমাণে চেষ্টা করুন।
খালি পেটে শিমুল মুল খাওয়ার উপকার
আমরা জেনেছি শিমুল মূল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে এখন আমরা জানবো খালি পেটে শিমুল মুল খেলে কি কি উপকার পাওয়া যায়। খালি পেটে শিমুল মুল খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী হতে পারে। শিমুল মূল প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে প্রাচীনকাল থেকে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এটি পেটে নানা সমস্যা যেমন এসিডিটি, গ্যাস ও বদহজম দূর করতে কার্যকর।
খালি পেটে শিমুল মূল খাওয়ার মাধ্যমে পেটের অম্লতা কমানো যায়, যা পরবর্তী সময় অ্যাসিডিটির সমস্যা প্রতিরোধের সাহায্য করে। এছাড়াও, শিমুল মূল শরীরের টক্সিন দূর করতে ভূমিকা রাখে। এটি ডায়রিয়া ও কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় সহায়ক, কারণ এটি অন্ত্রের পরিষ্কার রাখে এবং হজম শক্তি বাড়ায়। শিমুল মূল রক্তের শুদ্ধিকরণ এর সাহায্য করে, যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় ও ত্বকের নানা সমস্যার সমাধান করে।
শিমুল মূলের মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক উপাদান গুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। তবে খালি পেটে শিমুল মূল খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত কারো নেটে সকলের জন্য উপযুক্ত নাও হতে পারে। বিশেষত, গর্ভবতী নারী বা যাদের বিশেষ কোন সমস্যা স্বাস্থ্য সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য এটি ক্ষতিকারক হতে পারে।
শিমুল মূল কোথায় পাওয়া যায়
শিমুল গাছের মূল, যা শিমুল মুল নামে পরিচিত প্রধানত দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে পাওয়া যায়। বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম এই দেশগুলোতে শিমুল গাছ প্রচুর জন্মে। বাংলাদেশের প্রধানত সিলেট, চট্টগ্রাম সুন্দরবন, ও পার্বত্য এলাকাগুলোকে শিমুল গাছ বেশি দেখা যায়।
শিমুল মূল বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চল লাগে অনেক পাওয়া যেত। কিন্তু বর্তমানে এটি খুব কমই দেখা যায়। এর কারণ হলো শিমুলের তুলা পূর্বে ব্যাপক পরিচিত লাভ করেছিল কিন্তু বর্তমানে নেই। তাই গাছের সংখ্যা অনেক কমে গিয়েছে। ভুল আগে বাড়ির আশেপাশে আনাচে-কানাচে পাওয়া যেত। কিন্তু বর্তমানে তা বিলুপ্তির পথে।
শিমুল মূলের দাম কেমন
শিমুল মূলের উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম জেনেছেন। এবার জানাবো এর দাম সম্পর্কে। শিমুল মূলের দাম কত হতে পারে তা আমাদের অনেকেরই অজানা। সাধারণত শিমুল মূলের পাউডার যতটা মানসম্মত হবে এর দামও ততটাই বেশি পড়বে। আবার অনেক সময় ব্র্যান্ডের ওপরেও এর দাম নির্ভর করে থাকে।
বর্তমানে বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্মে শিমুল মূল বাসিমুল পাউডার বিক্রি করা হয়। যার জন্য এর সঠিক দাম বলা একেবারে সম্ভব না। তবে শিমুল মূল প্রক্রিয়াজাত করে বাজারে আসার কারণে এর দাম একটু বেশি হয়ে থাকে। বর্তমানে বাজার অনুযায়ী এক প্যাকেট ১৭৫ গ্রাম শিমুল মুল এর দাম পরে ২২৫ টাকা থেকে ২৩০ টাকা পর্যন্ত। তবে এই দাম সময়ের সাথে সাথে এবং স্থান অনুযায়ী কম বেশি হতে পারে।
শিমুল মূল খাওয়ার অপকারিতা
যার উপকারিতা রয়েছে তার কিছু অপকারিতা ও রয়েছে। এখন আমরা শিমুল মূল খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে জানব। নিচে শিমুল মুল খাওয়ার অপকারিতা গুলো বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হলো:
- পাচনতন্ত্রের সমস্যা: কিছু মানুষের ক্ষেত্রে শিমুল মূল খাওয়ার পর গ্যাস, পেট ফোলা বা অন্যান্য পাচনতন্ত্রের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- এলার্জিক প্রতিক্রিয়া: কিছু লোকের ক্ষেত্রে শিমুল মূলের প্রতি এলার্জি হতে পারে, যার ফলে চামড়ায় র্যাশ বা অন্যান্য অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
- গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যপান করানো: গর্ভবতী স্তন্যপানকারী মায়েদের জন্য শিমুল মূল খাওয়া নিরাপদ নয়, কারণ এটি হরমোনের কার্যক্রম কে প্রভাবিত করতে পারে।
- ঔষধের প্রভাব: কিছু ওষুধের সাথে শিমুল মূলের অবৈধ মিশ্রণ হতে পারে, যা অপ্রত্যাশিত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
- দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহার: দীর্ঘ সময় ধরে শিমুল মূল ব্যবহার করা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে, বিশেষ করে উচ্চ মাত্রায় ব্যবহার করলে।
- রক্ত সঞ্চালনের সমস্যা: শিমুল মূলে অতিরিক্ত ব্যবহার করলে রক্ত সঞ্চালনের সমস্যা হতে পারে, যার শরীরে অন্যান্য অংশে পর্যাপ্ত রক্ত সরবরাহে বাধা সৃষ্টি করে।
শেষ কথা : শিমুল মূল খাওয়ার ১২টি উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম
শিমুল মূল খাওয়ার উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আশা করছি এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনি বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছেন। শিমুল মূলে অসাধারণ সব ভেষজ গুণাবলী থাকার কারণে একে প্রাকৃতিক ভায়াগ্রাও বলা হয়ে থাকে। আপনি শিমুল মূল বাজার থেকে নিয়ে এসেও খেতে পারেন এর কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। তাই আর দেরি না করে আজ থেকেই শিমুল মূল নিয়ম অনুসারে সেবন করা শুরু করে দিন।
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। গুরুত্বপূর্ণ এবং এরকম আর্টিকেল যদি আরো পড়তে চান তাহলে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন। আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত এ ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি।
জানার উপায় ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url